বাবা প্রবাসী বাঙালি মা জার্মান. তাদের ছেলেটি অত্যন্ত মেধাবী কম্পিউটারকে যেমন খুশি ব্যবহারে সহজাত দক্ষতা আছে তার. কিন্তু সমস্যা বলতে একটাই মাথায় মাঝেমধ্যে খেয়াল পোকা নড়েচড়ে উঠে. এসব অবশ্য প্রতিভাবানদের খেতে একটু থাকে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনার ফাঁকে সেই নড়াচড়া শুরু হয়ে যায়. গ্রাজুয়েশন যখন শেষের মুখে তখনইপড়াশোনার পাট চুকিয়ে বেপাত্তা গেলেন ক্যাম্পাস থেকে যোগদিলেন অনলাইন ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান পেপালে সেখানেই পরিচয় হলো সাদ হারলে ও স্টি ভ চ্যানে র সঙ্গে. তারপর এই তিন বন্ধু মিলে বানিয়ে ফেললেন ইউটিউব সেটা 2005 সাল বাকিটা ইতিহাস.
জাওয়েদ করিম বাবা নাইমুল আর মা কৃষ্টিন দুজনে বিজ্ঞানী. পশ্চিম জার্মানির নেওসে জন্ম ও বেড়ে ওঠা জাবেদের. কিন্তু সেখানে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বর্ণবিদ্বেষ. এরপরের নাঈমুর কৃষ্টিনা সপরিবারে চলে আসেন আমেরিকায়. বড় হয়ে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে গ্র্যাজুয়েশনে ভর্তি হওয়ার ফাঁকেই সিলিকন গ্রাফিক্স ইন্টার্নশিপ করে ফেলেছিলেন জাওয়েদ অত্যন্ত মেধাবী জাওয়েদ কে দেখে রত্ন চিনতে ভুল করেননি পেপালের কর্ণধার. একজন ড্রপ আউট ছাত্র হয়েও তাই চাকরি জুটে গেল 2000 সালে অনলাইনে টাকা পাঠানোর ব্যাপারটা প্রযুক্তি হিসাবে বেশ নতুন সেই কারণে হয়তো পেপারের চাকরিতে আকর্ষণ বোধ করেছিল জাওয়েদ নতুন প্রযুক্তির প্রতি তার নেশায় আলাদা.
নতুন প্রযুক্তি একদিন পুরনো হয় এই কাজ বেশিদিন ভালো লাগেনা. ইতিমধ্যে পরিচয় হয়েছে দুই বন্ধুর সাথে. নতুন পরিকল্পনা ডাক দিচ্ছে মাথায়. চারপাশের থিকথিক করছে হাজারো ভিডিও কোনোটা খেলার কোনোটা সিনেমার কোনোটা গানের নিজের নানা মুহূর্ত এইসব ভিডিও গুলির জন্য যদি একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বানানো যায়. অনলাইনে অনেক সাইট থাকলেও শেয়ার করার মতন ভালো সাইট নেই. সান ফ্রান্সিসকোতে স্টি ভ চ্যানে র বাসায় নৈশভোজের আড্ডায় সিদ্ধান্ত করা হলো. আর তার সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তির ইতিহাসের শুরু হলো একটা নতুন অধ্যায় সেই নতুন ইতিহাসের মুল মস্তিষ্ক থেকে গেলেন এক বঙ্গসন্তান.
ইউটিউব জন্মের পিছনে প্রযুক্তিগত দায়িত্বটা মূলত পালন করেছিলেন জাওয়েদ বাকি দুজন ব্যবসায়িক দিকটা দেখতে বেশি করে জাওয়েদ নিজের খেয়ালে থাকেন আড়ালে থাকায় তার বেশি পছন্দ কোম্পানির সামনের সারিতে আসতে চাননি কখনোই. কোম্পানির অংশের সিংহভাগ রাখতে চাননি নিজের কাছেই. যে কারণে প্রথমেই হতে পারেনি তার নাম 2006 সালে যখন 165 কোটি ডলারের ইউটিউব কিনে নেন গুগোল তখনই প্রকাশ্যে আসে তার নাম তিনি অবশ্য মোটে 6 কোটি 40 লাখ ডলারের শেয়ার পেয়েছিলেন.
জন্মের পরেই ইউটিউব কেন সাড়া ফেলেছিল তার উত্তর খুঁজতে অতীতে ফেরার প্রয়োজন নেই এখনো যেকোনো ট্রেলার লাঞ্চ করার প্রধান মাধ্যম হলো ইউটিউব. ইউটিউবার হয়ে নিজস্ব চ্যানেল বানিয়ে কতজন রোজগার করে লক্ষ লক্ষ টাকা. ইউটিউবের ভিডিও সাম্রাজ্যঃ দেখেশুনে শেষ করতে গেলে 2 ও3 মানব জন্ম লাগবে. ডিজিটাল প্রযুক্তির দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন সেদিন একজন বঙ্গসন্তান. তার দুই বন্ধুর ভূমিকা অনস্বীকার্য না করেও বলা যায় ইউটিউব এর জন্মের প্রধান কারিগর ছিলেন জাওয়েদ.
ইউটিউব এর প্রথম ভিডিওটি আপলোড করেছিল জাওয়েদ নিজেই. মিট এট দ্যা জু নামের সেই আন্তরিক ভিডিওটি এযাবত 6 কোটির বেশি ভিউ পেয়েছে. সে যাহোক ইউটিউব লঞ্চ করার পর এর ঘরে ফেরে . কলেজ ক্যাম্পাস কলেজ ক্যাম্পাসে আবার যোগ দেয় গ্রাজুয়েশন শেষ করেন. ডাক পান ইলিনয় ইউনিভার্সিটি তে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য. ইউটিউব ছাড়াও ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স সিমিন হোসেন ব্যাড পাজল ভিডিও সিটি ইঞ্জিন রোবটিক ওয়েবক্যাম লাইব্রেরি কোয়াক মডেল বিবারের মতো আরও বেশ কয়েকটি প্রযুক্তির জন্ম দিয়েছিলেন জাওয়েদ তারপরে বেপাত্তা.
জাওয়েদ এখন ঠিক কি করছেন সঠিক উত্তর কারো জানা নেই অনেকেই বলেন একটি বহুজাতিক সংস্থার অন্যতম মাথা তিনি. সত্যি হলো এখনো একইভাবে কাজ করছেন নৈপথ্যে থেকে. ফেসবুক টুইটার ইনস্টাগ্রামের তার কোনও অ্যাকাউন্ট নেই. নতুন কোনো পরিকল্পনা হয়তো তিনি ভাবছেন ইউটিউব তার কাছে এখন অতীত ভিডিও জগতে তিনি আর ফিরবেন কিনা জানা নেই চমক দিতে জুড়ি নেই. হয়তো নতুন কিছুর অপেক্ষায় আমরা আছি.
0 comments:
Post a Comment